Skip to main content

মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর জীবনি।

 মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহ তায়ালার প্রেরিত বান্দা ও রাসূল। তিনি বর্তমান দেশ সৌদি, আরবের বিখ্যাত কুরাইশ বংশে ৫৭০ খ্রিস্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম আব্দুল্লাহ, মাতার নাম আমিনা, দাদার নাম আব্দুল মুত্তালিব এবং নানার নাম ওয়াহাব। জন্মের পূর্বেই তার পিতা ইন্তেকাল করেন। দাদা আব্দুল মুত্তালিব তার নাম রাখেন মোহাম্মদ। এবং তার মাতা নাম রাখেন আহমদ। 


জন্মের পর মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) ধাত্রী মা  হালিমার ঘরে লালিত পালিত হন। মা হালিমা বানু সাদ গোত্রের লোক ছিলেন। তখনকার সময়ে বানু সাদ গোত্রের লোক বিশুদ্ধ আরবিতে কথা বলতো। ফোনে প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শিশুকাল থেকেই বিশুদ্ধ আরবি ভাষায় কথা বলতেন। শৈশব কাল থেকেই মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) এর মাঝে ন্যায় ও ইনসাফের নজির দেখা যায়। তিনি ধাত্রী মা হালিমার একটি স্তন থেকে দুধ পান করতেন এবং অন্যটি তার দুধভাই আব্দুল্লার জন্য রেখে দিতেন। মা হালিমা মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-কে পাঁচ বছর লালন-পালন করেন,তারপর তাকে মা আমিনার নিকট রেখে যান। 


তারপর প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) এর বয়স যখন ছয় বছর তখন তার মাতা [আমিনা] ইন্তেকাল করেন।তিনি অসহায় হয়ে পড়েন। তারপর তিনি দাদা আব্দুল মুত্তালিবের কাছে লালিত পালিত হন। আট বছর বয়সে দাদা আব্দুল মুত্তালিবও ইন্তেকাল করেন। এরপর লালন- পালনের দায়িত্ব নেন চাচা আবু তালিব। তিনি তাকে অত্যন্ত আদর স্নেহ দিয়ে লালন পালন করতে থাকেন। 


◾কৈশোর◾

__চাচা আবু তালিব এর আর্থিক অবস্থা ছিলো অসচ্ছল। চাচার এ অবস্থা দেখে মহানবী (সাঃ) চাচাকে সহযোগিতা করেন, তিনি মেষ চড়াতেন। সকল মেষপালক রাখাল বালকদের জন্য তিনি ছিলেন উত্তম আদর্শ। তাদের সাথে তিনি বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ করতেন। তিনি ১২ বছর বয়সের ব্যবসার উদ্দেশ্যে চাচার সঙ্গে সিরিয়ায় যান। যাত্রাপথে 'বুহায়রা' নামক এক পাদ্রির সাথে দেখা হলে সে পাদ্রী মোহাম্মদ (সাঃ) কে অসাধারণ বালক বলে আখ্যায়িত করেন। এবং ভবিষ্যৎবাণী করে বলেন যে,''এই বালকই হবে শেষ জামানার আখেরি নবী'' তথা শেষ নবী। 

শৈশব কাল থেকেই মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) ছিলেন সত্যবাদী ও শান্তিকামী। সিরিয়া থেকে তিনি ফিজার যুদ্ধের বিভীষিকা দেখলেন। কায়স গোত্র অন্যায় ভাবে কুরাইশদের উপর এ যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়েছিল। এজন্য একে 'হরবুল ফিজার' বা অন্যায় যুদ্ধ বলা হয়। এ যুদ্ধ পাঁচ বছর স্থায়ী হয়। মহানবী (সাঃ) এ যুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেননি। তবে যুদ্ধের ভয়াবহতা প্রত্যক্ষ করেছিলেন। এ যুদ্ধে বহু মানুষ আহত ও নিহত হয়। তাতে তার কোমল হৃদয় কেঁদে ওঠে। আহতদের আর্তনাদ শুনে তিনি অস্থির হয়ে পড়লেন। শান্তিকামী মানুষ হিসেবে এ অশান্তি তার সহ্য হলো না। তাই তিনি আরবের শান্তি কামিনী যুবকদের নিয়ে 'হিলফুল ফুযুল'(শান্তি সংঘ) গঠন করেন। এই সংঘের উদ্দেশ্য ছিল দুস্থদের সেবা, অত্যাচারীকে প্রতিরোধ ও অত্যাচারীতকে সাহায্য করা, শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করা এবং গোত্রে গোত্রে শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখা।

মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর চারিত্রিক গুণাবলী,- আমানতদারি, সত্যবাদিতা, ন্যায়নিষ্ঠা ও দায়িত্বশীলতার কারণে তৎকালীন আরবের লোকেরা তাকে আল-আমিন (বিশ্বাসী) উপাধি দিয়েছিল।


◾যৌবনকাল◾

যুবক মুহাম্মদ (সাঃ)-এর সত্যবাদিতা, ন্যায়পরায়ণতা ও চারিত্রিক গুণাবলীর সংবাদ মক্কার দিকে দিকে ছড়িয়ে পড়লো। তখনকার আরবের শ্রেষ্ঠ সম্পদশালী বিদুষী ও বিধবা মহিলা হযরত খাদিজা (রাঃ) তার ব্যবসার দায়িত্ব হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর অর্পণ করেন। হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) তার ব্যবসায়িক কাজে সিরিয়ায় যান। তিনি এ ব্যবসায়ী আশাতীত লাভবান হয়ে দেশে ফিরে আসেন। যুবক হয়েও তিনি খাদিজা (রাঃ) এর ব্যবসায়ী কাজে যে দায়িত্বশীলতা ও সততার পরিচয় দিয়েছিলেন তা সর্বকালের সকল যুবকের জন্য আদর্শ। খাদিজা (রাঃ) নারী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের গুণাবলী পর্যবেক্ষণ করার জন্য তার অত্যন্ত বিশ্বস্ত কর্মচারী "মাইসারা" কে তার সাথে সিরিয়ায় পাঠান। মাইসারা সিরিয়া থেকে ফিরে এসে মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের চারিত্রিক গুণাবলীর বর্ণনা খাদিজা (রাঃ) কে দেন। বর্ণনা শুনে মুগ্ধ হয়ে খাদিজা নিজেই হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-ুএর নিকট তার বিবাহের প্রস্তাব পাঠান।চাচা আবু তালিবের অনুমতি নিয়ে মহানবী (সাঃ) খাদিজা (রাঃ) কে বিবাহ করেন। এ সময় নবীজি)(সাঃ) এর বয়স ছিল ২৫ বছর। এবং খাদিজা (রাঃ)এর বয়স ছিল ৪০ বছর। বিবাহের পর খাদিজার আন্তরিকতায় ও হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) প্রচুর সম্পদের মালিক হন। কিন্তু তিনি এ সম্পদ নিজের ভোগ-বিলাসির কাজে ব্যয় না করে অসহায়, দুঃখী, নিপীড়িত ও গরিব মিসকিনদের সেবায় ব্যয় করেন।

মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-বয়স যখন ৩৫ বছর তখন  কাবা শরীফ পুনরায় নির্মাণ করা হয়। তখন হাজরে আসওয়াদ (কালো পাথর) স্থাপন নিয়ে আরবের বিভিন্ন গোত্রের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। সবাই হাজরে আসওয়াদ স্থাপনের গৌরব অর্জন করতে চাই। তাতে কেউ ছাড় দিতে রাজি নয়। হলে গোত্রে গোত্র যুদ্ধ বেধে যাওয়ার উপক্রম হয়। অতঃপর সকলে এ সিদ্ধান্তে উপনীত হয় যে, পরের দিন সকালে সর্বপ্রথম যে ব্যক্তি কাবা ঘরে প্রবেশ করবে আর ফয়সালা মেনে নেওয়া হবে। সেদিন সর্বপ্রথম সকলের আগে হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) কাবা ঘরে প্রবেশ করেন। অতঃপর সবাই এক বাক্যে বলে উঠলো, এই এসেছেন আল-আমিন, আমরা সবাই তার প্রতি আস্থাশীল ও সন্তুষ্ট। তখন মহানবী (সাঃ)অত্যন্ত বিচক্ষণতা ও নিরপেক্ষতার সাথে যে ফয়সালা দিলেন সফলতা মেনে নিলো।ফলে তারা অনিবার্য রক্তপাত থেকে মুক্তি পেল। এবং সকলে মিলে হাজরে আসওয়াদ স্থাপন করলেন। 


◾নবুয়ত প্রাপ্তি ◾

হযরত খাদিজা (রাঃ)এর সাথে বিবাহের পর হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)মক্কার অদূরে হেরা পর্বতের গুহাই গভীর ধ্যানে মগ্ন থাকতেন। দীর্ঘদিন ধ্যানে মগ্ন থাকার পর ৪০ বছর বয়সে ৬১০ খ্রিস্টাব্দে পবিত্র রমজান মাসের কদরের রাতে হযরত জিব্রাইল (আঃ) তার নিকট ওহী নিয়ে আসেন এবং তিনি নবুওয়াত প্রাপ্ত হন। জিব্রাইল (আঃ) মহানবী (সাঃ)কে পড়তে বললে তিনি বলেন আমি পড়তে জানি না। তখন জিব্রাইল (আঃ) তাকে জড়িয়ে ধরে বলেন পড়ুন, নবী আবারো বলেন আমি পড়তে জানি না। এভাবে তিনবার নবীকে জড়িয়ে ধরলেন। অতঃপর তৃতীয়বারের সময় তিনি পড়তে সক্ষম হলেন।বাড়ি ফিরে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) প্রচন্ড অসুস্থ হয়ে পড়লেন। অতঃপর খাদিজা (রাঃ) কে সব ঘটনা খুলে বললেন এবং জীবনের আশঙ্কা করলে। তখন হযরত খাদিজা (রাঃ) তাকে সান্ত্বনা দিয়ে বললেন -না, কখনো না। আল্লাহর শপথ.! তিনি আপনাকে কখনো অপদস্থ করবেন না। কারণ আপনি আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করেন, দোস্ত ও দুর্বলদের সাহায্য করেন, নিঃস্ব ও অভাবিদের উপার্জনক্ষম করেন। মেহমানদের সেবা যত্ন করেন সুতরাং আল্লাহ তায়ালা আপনার অনিষ্ট চাইবেন না। 









Comments

Popular posts from this blog

ফেসবুক ক্যাপশন

নিজের সময়কে দামি বানাও; _যাকে তাকে দিয়ে নষ্টো কোরো না...✌✌ _সম্পর্কের নাম যাইহোক না কেন; খারাপ সময়ে যে পাসে থাকবে সেই প্রিয় মানুষ...💚💚 _প্রতি টা মানুষই সুখী তার নিজ নিজ কল্পনার জগতে...😊😊 _I am not alonea.. ALLAH is always with me..💙💙 _তারে খুঁজতে গিয়ে হারালাম নিজেকে,  আর নিজেকে খুঁজতে গিয়ে হারালাম পুরা দুনিয়াকে.🤦‍♂️       _আমার শখের মানুষটা আজ অন্য কারোর শখ মিটাতে ব্যস্ত...🤕💔 _একটা পুরুষ কখনো তার পছন্দের নারীকে হারাতে চায়না...😇☺️ _স্বপ্ন দেখা কমিয়ে দাও বাস্তবতা খুব কঠিন..🤧🥵 _নিজের ফালতু আবেগ কন্ট্রোল করতে পারলেই জীবন সুন্দর.. 🙂😍 _বেঁচে আছি এটাই অনেক,  সব সময় ভালো থাকতে হবে এমন কোনো কথা নাই... 😊😊 _জীবনে প্রচুর ধৈর্য ধরতে হবে,,  স্বপ্ন পূরণের জন্য...!!😊 _ধমকি আমাকে দিও না, কারণ আমার বংশ ভালো আমি না..🤟😎 _তুমি যার জন্য কাঁদো..🥹 সে তোমার গল্প অন্যকে বলে হাসে..😅💔 _শুকনো পাতার মতো ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিলাম,  কেউ একজন এসে কুড়িয়ে নিলো,             তাও আবার জ্বালানোর জন্য....🥹💔🤕 _৫০০ টাকায় দেহ পাওয...